মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ২০২২ | মাসি পিসি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাসি পিসি গল্প আহ্লাদি নামক একজন তরুনী ও তার মাসি পিসি কে ঘিরে। স্বামীর ঘরে অত্যাচারের কারনে আহ্লাদি তার মাসি পিসির কাছে চলে আসে। এবং তারা তাকে আগলে রাখে। কিন্তু তার স্বামীর জগু তাকে নিতে চায় কিন্তু সে তার স্বামীর অত্যাচারের কারনে তার কাছে ফিরে যেতে চায় না। মাসি ফাঁসি ও তাদের মেয়েকে ফেরত পাঠায় না। আহ্লাদির স্বামী বিভিন্নভাবে তাকে নেওয়ার জন্য কৌশল করতে থাকে, আর মাসি পিসি ও নানাভাবে তাদের সন্তানকে আগলে রাখে। কারণ এ সময়ে তার আলাদা যত্নের প্রয়োজন কিন্তু স্বামীর বাড়ি গেলে তার ওপর নির্যাতন করা হবে। তাই তারা থাকে তার স্বামীর বাড়িতে ফেরত পাঠায় না।

মাসি পিসি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় গল্পটি একটি মানবিক জীবন যুদ্ধের গল্প। স্বামীর নির্মম নির্যাতনের কারণে মাতা পিতাহীন আহ্লাদি মাসি পিসির কাছে থাকে এবং তারা সকল অত্যাচার সহ্য করে আহ্লাদিকে আগলে রাখে।

মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন

মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন
মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য পড়া প্রয়োজন। এজন্য আমরা মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো এবং পাশাপাশি মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর গুলো এখানে দিলাম আশা করি উপকৃত হবেন। মাসি পিসি গল্পের mcq ও মাসি পিসি গল্পের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পড়ার পরে যদি মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর করেন তাহলে সুবিধা হবে। মাসি পিসি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় গল্প টি আগে পড়ে নিবেন তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১: কুড়িগ্রামের তারামন বিবি। মুক্তিযুদ্ধে নিজের বীরত্বের "স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলাদেশ সরকারের নিকট থেকে বীর প্রতীক খেতাব লাভ করেন। একজন সাধারণ নারী হয়েও দেশের দুর্দিনে বসে থাকেননি, পালিয়ে যাননি; একজন প্রকৃত বীরের মতোই সেদিন অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে তিনি শত্রুদের মোকাবিলা করেছেন।

ক. ‘মাসি-পিসি' গল্পটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?

খ. ‘মাসি-পিসি' কেন কানাই চৌকিদারের সাথে গেল না?

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘মাসি-পিসি' গল্পের সাদৃশ্য বর্ণনা করো। 
ঘ. “উদ্দীপক ও 'মাসি-পিসি' গল্পে অধিকার সচেতন নারীর সংগ্রামী চেতনা ফুটে উঠেছে”— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘মাসি-পিসি' গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় কলকাতার ‘পূর্বাশা' পত্রিকায়। 

খ. আহ্লাদির নিরাপত্তার কথা ভেবে মাসি-পিসি কানাইয়ের সাথে কাছারিবাড়ি যেতে রাজি হয়নি।

স্বামীর অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য আহ্লাদি তার বাবার বাড়ি চলে আসে এবং মাসি-পিসির কাছে আশ্রয় নেয়। কিন্তু এখানেও তার নিরাপত্তা নেই। জোতদার, দারোগা ও গুজা-বদমায়েশদের লালসার দৃষ্টি পড়ে তার ওপর। আহ্লাদির ক্ষতি করার জন্য কনোই ঢৌকিদার মাঝরাতে কৌশলে মাসি-পিসিকে কাছারিবাড়িতে যেতে নির্দেশ দেয়। মাসি-পিসি তার এই অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পারে। তারা আশকো করে, দুজনে একসাথে কাছারিবাড়িতে গেলে আহ্লাদির বিপদ হতে পারে। তাই তারা আহ্লাদিকে ঘরে একা রেখে কাছারিবাড়ি যেতে অস্বীকৃতি জানায়।

গ. সংগ্রামী মনোভাবের দিক থেকে উদ্দীপকের সাথে মাসি-পিসি গল্পের 'মাসি-পিসি'র সাদৃশ্য রয়েছে। 

“মাসি-পিসি' গল্পে মাসি ও পিসির জীবনসংগ্রামের চিত্র ফুটে উঠেছে। এখানে লক্ষণীয়, মাসি-পিসি সর্বদা অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে লিপ্ত। জীবনসংগ্রামে টিকে থাকার জন্য গ্রাম থেকে তরিতরকারি শহরে নিয়ে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে হয় তাদের। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও তারা স্বামীর ঘর ছেড়ে আসা আহ্লাদির অভিভাবকের দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে না।

উদ্দীপকের তারামন বিবি বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশের সংকটকালে তিনি বীরদর্পে অ তুলে নেন হাতে। পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের প্রতি প্রতিবাদী ভূমিকা নিয়ে তিনি যুদ্ধে নামেন। ছিনিয়ে আনেন এ দেশের স্বাধীনতা। একইভাবে 'মাসি-পিসি' গল্পের মাসি পিসিও জীবনসংগ্রামে টিকে থাকতে প্রতিকূল পরিবেশের সাথে লড়াই করে। এর মূলে প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। সামী মানসিকতা এদিকটিই উদ্দীপকের সাথে মাসি-পিসি' গল্পের সাদৃশ্য নির্মাণ করে।

ঘ. 'মাসি-পিসি' গল্পে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নারীর দৃঢ় ও সাহসী অবস্থান ব্যস্ত হয়েছে।।

আলোচ্য গল্পের মার্সি-পিসি দুজনই নিম ও বিধবা জীবনসংগ্রামে টিকে থাকার জন্য তারা ধান ভানে, কাঁথা সেলাই করে এবং শাক-পাড়া কুড়িয়ে শহরের বাজারে বিক্রি করে। আহ্লাদি স্বামীর ঘর ছেড়ে এসে তাকে পরম মমতায় আগলে রাখে। অগুর অত্যাচার ও সমাজের বদলোকের কুদৃষ্টি থেকে তাকে রক্ষা করতে সর্বদা সতর্ক থাকে।

উদ্দীপকের তারামন বিবি একজন সপ্তামী নারী। দেশ যখন পরাধীনতার নিগড়ে বন্দি, তখন স্বাধীনতাকামী এ নারী বীরদর্পে হাতে তুলে নেয় অম্ল পাকবাহিনীর নির্মম অত্যাচারের প্রতিবাদে অস্ত্র হাতে যুদ্ধে নামে। ভয়ে ভীত হননি তিনি, বরং অস্ত্র হাতে লড়াই করে শত্রুদের মোকাবিলা করেছেন। এমন মানসিকতাই আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের প্রধান সহায়ক ছিল।

"মাসি-পিসি' গল্পের মাসি-পিসি এবং আলোচা উদ্দীপকের তারামন বিবি প্রতিবল পরিবেশের সাথে লড়াই করে। মাসি-পিসি' তাদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার আহ্লাদিকে রক্ষার জন্য সাহসী ও বুদ্ধিদীপ্ত ভূমিকা পালন করে। বেঁচে থাকার অধিকার সবার। এ অধিকারে নিজেদের বঞ্চিত না করে বরং সংগ্রামের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টায় রত তারা। তেমনি উদ্দীপকের তারামন বিবিও সংগ্রামের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে দৃঢ় ভূমিকা রাখে। সংগ্রামের মাধ্যমে অধিকার আদায়ে তারা সাৎসিকতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। তাই এ কথা যথার্থই যে, উদ্দীপক ও 'মাসি-পিসি' গজ্ঞে অধিকার সচেতন নারীর সংগ্রামী চেতনা ফুটে উঠেছে।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২: মন্বন্তর, যুদ্ধের পরেও বাংলাদেশের কৃষকরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ফসলের ভাগের ক্ষেত্রে চার ভাগের মধ্যে তিন ভাগের দাবি নিয়ে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলেছিল, এটাই তেভাগা আন্দোলন। স্বভাবতই এই দাবি জোতদার, জমিদারেরা স্বীকার করতে পারেনি। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সশস্ত্র লড়াইও হয়েছিল। জোতদার জমিদারের পক্ষে ছিল তাদের লেঠেল গুন্ডা এবং পুলিশ দারোগা। আর কৃষকের পক্ষে ছিল তাদের সংহতি; সংখ্যায় যারা বেশি হলেও নির্যাতিত। তবে নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে সর্বস্তর থেকে। অশিক্ষিত, গরিব, কৃষক, নারী পুরুষের উত্তাল সমুদ্রের সামনে নত হয়েছে শোষক সমাজ।

ক. বেমক্কা কী?

খ. মাসি-পিসি খালি ঘরে আহ্লাদিকে রেখে যাওয়ার সাহস পায় না কেন?

গ. উদ্দীপকটি 'মাসি-পিসি' গল্পের সাথে কীভাবে সম্পর্কযুক্ত তা ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি 'অশিক্ষিত, গরিব, কৃষক, নারী-পুরুষের উত্তাল সমুদ্রের সামনে নত হয়েছে শোষক সমাজ।' 'মাসি-পিসি' গল্পের চরিত্রগুলোর আলোকে তা বিশ্লেষণ করো।

২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. বেমক্কা শব্দের অর্থ হলো- অসংগত।

খ. আহ্লাদির নিরাপত্তার কথা ভেবে মাসি-পিসি তাকে ঘরে রেখে বাইরে কোথাও যাওয়ার সাহস পায় না।

স্বামীর অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য আহ্লাদি বাবার বাড়ি চলে আসে এবং মাসি-পিসির কাছে আশ্রয় গ্রহণ করে। কিন্তু এখানেও তার নিরাপত্তা নেই। গ্রামের জোতদার, দারোগা ও গুন্ডা-বদমায়েশদের লালসার দৃষ্টি পড়ে তার ওপর। তাই খালি ঘরে আহ্লাদিকে রেখে কোথাও যাওয়ার সাহস তাদের হয় না। দুজনে মিলে কোথাও যেতে হলে আহ্লাদিকে তারা সাথে নিয়ে যায়।।

গ. উদ্দীপকটি সমাজের জোতদার-জমিদারদের অত্যাচারের দিক থেকে ‘মাসি-পিসি' গল্পের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

'মাসি-পিসি' গল্পে সমাজের জোতদার প্রভাবশালীদের দুর্বলের প্রতি অত্যাচারের চিত্র ফুটে উঠেছে। নিজেদের প্রভাব, লিপ্সা চরিতার্থ করার জন্য সমাজের ক্ষমতাশীলরা সর্বদাই নির্যাতন করে নিচু তলার লোকদের ও দুর্বলদের। তাদের সাথে কিছু গুন্ডা-বদমায়েশ সহযোগী হিসেবে কাজ করে। উদ্দীপকেও জোতদার-জমিদারদের অত্যাচারের চিত্র উঠে এসেছে। তেভাগা আন্দোলনে কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করেছিল। কিন্তু ফসলের ন্যায্য দাবিদার হওয়া সত্ত্বেও কৃষকের এই যৌক্তিক দাবিকে অস্বীকার করে জোতদার-জমিদারেরা। এ নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হলে লাঠিয়াল, গুন্ডা, পুলিশ-দারোগারা তাদের পক্ষ অবলম্বন করে। ফলে অসহায় কৃষকের ওপর চলে শোষণ ও নির্যাতন। 'মাসি-পিসি' গল্পের জোতদার প্রভাবশালীদের অত্যাচারের বিষয়টিই উদ্দীপকে উপস্থাপিত হয়েছে। সেখানেও আহ্লাদি স্বামীগৃহ থেকে নির্যাতিত হয়ে মাসি ও পিসির কাছে আশ্রিত হয়। অসহায়ত্বের সুযোগে তাদের ওপর সমাজের জোতদার, পুলিশ, গুন্ডারা হামলে পড়ে। তারা বুঝতে পারে মাসি-পিসি বিধবা ও অসহায় নারী। সেই সুযোগে আহ্লাদিকে তারা কব্জায় নিতে চায়। সুতরাং, দুর্বলের প্রতি সবলের অত্যাচারের দিক দিয়ে উদ্দীপকটি ‘মাসি-পিসি' গল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ঘ. ‘অশিক্ষিত, গরিব, কৃষক, নারী-পুরুষের উত্তাল সমুদ্রের সামনে নত হয়েছে শোষক সমাজ’ – উদ্দীপক ও 'মাসি-পিসি' গল্পের আলোকে মন্তব্যটি যথার্থ।

‘মাসি-পিসি' গল্পে শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। জোতদার, দারোগা, গুন্ডাদের বিরুদ্ধে মাসি ও পিসির রুখে দাঁড়ানোর মাধ্যমে সেই প্রভাব প্রত্যক্ষ করা যায়। তাদের প্রতিবাদ ও দৃঢ়তার মুখে সমাজে সেই প্রভাবশালী ও তাদের সহযোগীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।

উদ্দীপকের বর্ণনায় ফুটে উঠেছে শোষিত-বঞ্চিত-নির্যাতিত মানুষের আন্দোলনের সফলতা। তেভাগা আন্দোলনে কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্য ভাগ দাবি করে আন্দোলন করেছিল। কিন্তু জোতদার-জমিদারেরা তা অস্বীকার করে তাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে। লাঠিয়াল, গুন্ডা, পুলিশ, দারোগারা জোতদারদের পক্ষ অবলম্বন করে অত্যাচার বাড়াতে থাকে। তখন অশিক্ষিত কৃষক, নারী-পুরুষ উত্তাল হয়ে উঠলে মাথা নত করতে বাধ্য হয় শোষক সমাজ।

‘মাসি-পিসি' গল্পের অবস্থা পর্যালোচনায়ও শোষিত মানুষের প্রতিবাদের জয় প্রত্যক্ষ করা যায়। গল্পে স্বামীর নির্যাতনে প্রত্যাবর্তনকারী আহ্লাদি তার মাসি ও পিসির কাছে আশ্রয় গ্রহণ করে। কিন্তু সেখানে সে নির্বিঘ্নে থাকতে পারে না। সমাজের জোতদার, চৌকিদার, দারোগা, গুন্ডা, বদমায়েশরা তাকে পেতে অপতৎপরতা শুরু করে। তারা মনে করে মাসি ও পিসি যেহেতু বিধবা, অসহায় নারী, তাদের কাছ থেকে আহ্লাদিকে নিয়ে যাওয়া কোনো ব্যাপার হবে না। তাই তারা রাতের বেলা কূট-কৌশল ও জোর জবরদস্তির মাধ্যমে আহ্লাদিকে নিতে আসে। কিন্তু মাসি ও পিসি সাহস নিয়ে দা-কাটারি হাতে বের হয়। আশপাশের লোকদের হাঁকডাক দিয়ে আহ্বান জানালে সবাই ছুটে আসে। সকলের এই জাগরণ দেখে উদ্দীপকের মতো এখানকার শোষক জোতদার, গুন্ডা-বদমায়েশরাও পালিয়ে যায়। উদ্দীপক ও আলোচ্য গল্পের ঘটনায় দেখা যায়, নারী পুরুষের উত্তাল সমুদ্রের সামনে মাথা নত করতে হয় শোষকদের।


সৃজনশীল প্রশ্ন ৩: মা বহু আগেই মৃত। বাবা থেকেও নেই। অবস্থায় রাবেয়া বেড়ে ওঠে দূরসম্পর্কের এক চাচক আহয়ে। চাচি পরিক কিন্তু আন্তরিক। নিজের মেয়ের মা রাবেয়াকে আগলে রেখেছেন। রাবেয়াকে ভালো রাখার জন্য মাঝে মাঝে তিনি অন্যের বাড়িতে কাজও করেন। কৃতজ্ঞতায় রাবেয়ার চোখে জল নেমে আসে।

ক. বাহকের মাথায় খড় চাপাতে ৰাস্ত কে? 

খ. তাদের দুজনেরই এখন আহ্লাদি আছে- কেন বলা হয়েছে।ব্যাখ্যা করো।

গ. মাসি-পিসি' গল্পের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে। আলোচনা করো।

ঘ. মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতা মানুষকে মহান করে তোলে'—উদ্দীপক ও 'মাসি-পিসি'র আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. বাহকের মাথায় খড় চাপাতে ব্যস্ত কৈলাশ। 

খ. আমাদির প্রতি মাসি-পিসির দায়িত্ববোধের কথা বলতে গিয়ে প্রসঙ্গটি এসেছে।

মাসি-পিদি অতি কষ্টে শহরে গিয়ে সবজি বিক্রি করে নিয়োদের খরচ চালায়। বিষবা ও নিং মাসি-পিসি জীবনযুদ্ধে পরাজিত না হয়ে ব্যবসায় করে সফল হয়েছে। তাছাড়া স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আহ্লাদি যখন মাসি-পিসির কাছে চলে আসে, তখন মাসি-পিসি নিজেদের চেয়ে আহ্লাদির কথাই বেশি ভাবতে থাকে। নিজেদের বেঁচে থাকা শুধু নয়, তাদের দুজনেরই এখন আহ্লাদি আছে' কথাটির মধ্য দিয়ে আগ্লানির প্রতি তাদের সেই প্রবল ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে

গ. উদ্দীপকে 'মাসি-পিসি' পরে বর্ণিত আপনজনের প্রতি মমত্ববোধ ও দায়িত্বশীলতার দিকটি ফুটে উঠেছে। আলোচা গল্পের আহ্লাদি পিতৃমাতৃহীন এক আণী নির্যাতনের শিকার হয়ে সে বাপের বাড়ি চলে এলে, মাসি-পিসি তার নির্ভরযোগ্য অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হনা। বিধবা ও নিঃস্ব এই মাসি-পিসি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার পাশাপাশি বিরূপ সমাজ থেকে -আহ্লাদিকে রক্ষার জন্য সদা তৎপর ছিল।

উদ্দীপকের মাতৃহীন রাবেয়া তার দূরসম্পর্কের চাচির আশ্রয়ে বেড়ে উঠেছে। তার চাচি দরিদ্র হলেও রাবেয়াকে ভালো রাখার চেষ্টার তৎপর। এজন্য তিনি অন্যের বাড়িতে গিয়ে কাজ করতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। এর মধ্য দিয়ে রাবেয়ার প্রতি তার মমত্ববোধ ও দায়িত্ববোধের দিকটি প্রকট হয়ে ওঠে। এদিকে, আলোচা গল্পের ‘মাসি-পিসি' জীবিকানিবাদের কঠিন সংগ্রামের পাশাপাশি আহ্লাদিকেও আগলে রেখেছে। তারা তার ভরণপোষণ যেমন করেছে, তেমনই তাকে লালসা-উন্মত জোতদারের কাছ থেকেও রক্ষা করেছে। এসব বিবেচনায় বলা যায় যে, উদ্দীপকে আলোচ্য গল্পে প্রকাশিত মমত্ববোধ ও দায়িত্বশীলতার দিকটিই ফুটে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপকের রাবেয়ার চাচি এবং "মাসি-পিসি' গল্পের মাসি-পিসি মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতার যে পরিচয় দিয়েছেন তা তাদের মানুষ হিসেবে মহান করে তুলেছে।

আলোচ্য গল্পের মাসি-পিসি ছিলেন অসহায় ও নির্যাতিত আহ্লাদির নির্ভরযোগ্য অভিভাবক। নিপীড়নের শিকার আহ্লাদিকে ভালো রাখতে তারা চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখেনি। সকল প্রতিকূলতা থেকে তারা আহ্লাদিকে আগলে রেখেছে। আহ্লাদিকে নিরাপদে রাখতে তারা লালসা-উম্মত্ত লোডনার, দারোগ্য এমনকি গুন্ডা বদমায়েশনের সঙ্গে লড়াই করতেও পিছপা হয়নি। তাদের এমন আচরণের পেছনে ছিল স্নেহ-ভালোবাসা। 

উদ্দীপকের রাবেয়ার চাচি তার দূরসম্পর্কের চাচি হলেও রাবেয়ার প্রতি তার আন্তরিকতার ত্রুটি ছিল না। নিজে দরিদ্র হলেও রাবেয়াকে ভালো রাখতে তিনি সর্বদা তৎপর ছিলেন। এজন্য তিনি অন্যের বাড়িতে গিয়ে কাজ করতেও কুণ্ঠিত হননি। এর মধ্য দিয়ে চাচির মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতার দিকটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এদিকে, আলোচ্য গল্পের মাসি পিসির মধ্যেও উক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো বিদ্যমান

'মাসি-পিসি' গল্পের বিধবা ও নিঃস্ব মাসি-পিসি যখন নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য লড়ড়ছিল, তখন তাদের কাছে এসে হাজির হয় স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার আহ্লাদি। কিন্তু আহ্লাদিকে তারা বোঝা হিসেবে গণ্য করেনি, বরং পরম মমতায় তাকে আগলে রেখেছিল। নিজেদের পাশাপাশি আহ্লাদির ভরণপোষণের জন্য জীবিকানির্বাহের কঠিন সংগ্রাম করতে হতো তাদের। একইসাথে আহ্লাদিকে গাঁয়ের লালসা-উন্মত্ত মানুষদের কাছ থেকে রক্ষা করতেও সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যেও তারা আহ্লাদিকে অত্যাচারী স্বামীর কাছে না পাঠানোর ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল। এমন মমত্ববোধ, মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতার কারণে তারা হয়ে উঠেছে মহান। উদ্দীপকের রাবেয়ার চাচিও একই বৈশিষ্ট্য ধারণ করে মহান হয়ে উঠেছে । এদিক বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৪: পলাশ সাহেব গ্রামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার চাতুরী ছলনা আর কূটকৌশল গ্রামের সহজসরল মানুষকে প্রতারিত করে। কিন্তু এখন দিনবদলের হাওয়া বইছে। নিপীড়িত মানুষ ন্যায়-বিচারহীন অসহায়ত্বের অপমান মুখ বুজে সইছে না। তারা সংঘবদ্ধভাবে অনেককিছুর প্রতিবাদ করে এখন।

ক. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম প্রকাশিত গল্পের নাম কী?

খ. ছল ছল চোখে একবার তাকায় আহ্লাদির দিকে ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের পলাশ সাহেব 'মাসি-পিসি' গল্পের কোন চরিত্রকে স্মরণ করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. 'মাসি-পিসি' গল্পে যে প্রতিবাদী চেতনার প্রকাশ পেয়েছে, তা উদ্দীপক ও 'মাসি-পিসি' গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম প্রকাশিত গল্পের নাম 'অতসীমামী'

খ. আহ্লাদিকে দেখে তার নিজের মেয়ের কথা মনে হওয়ায় বুড়ো রহমানের চোখ ছলছল করে।

আহ্লাদির চেয়ে বয়সে ছোটো মেয়েটাকে রহমান বিয়ে দিয়েছিল। অবুঝ মেয়েটা শ্বশুরবাড়ি না যাওয়ার জন্য খুব কেঁদেছিল। কিন্তু তার ভালোর জন্যই তাকে জোর করে শ্বশুরবাড়ি পাঠায় রহমান। সেখানে গিয়ে অল্পদিন পরেই মেয়েটা মারা যায়। একই সমস্যার শিকার আহ্লাদিকে দেখে মেয়ের কথা মনে হওয়ায় বুড়ো রহমানের চোখ ছলছল করে।

গ. উদ্দীপকের পলাশ সাহেব 'মাসি-পিসি' গল্পের গোকুল চরিত্রকে স্মরণ করিয়ে দেয়। 

'মাসি-পিসি' গল্পে গোকুলের দৃষ্টি ছিল আহ্লাদির ওপর। ছলে-বলে কৌশলে সে তাকে পেতে চায়। কিন্তু 'মাসি-পিসি' আহ্লাদিকে সবসময় নিরাপত্তার বেষ্টনীতে রাখত। একদিন মাসি-পিসি সরকার বাবুর সঙ্গে বাজারের তোলা নিয়ে ঝগড়া করলে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোকুল রাতের বেলায় কানাই চৌকিদার ও তিনজন পেয়াদার সাহায্যে মাসি পিসিকে কাছারিবাড়ি নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু মাসি-পিসি গোকুলের এই ষড়যন্ত্র বুঝতে পারে এবং আহ্লাদিকে ঘরে একা রেখে কাছারিবাড়িতে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। তাদের ধরে বেঁধে নিয়ে যেতে চাইলে তারা বঁটি আর কাটারি হাতে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।

উদ্দীপকের পলাশ সাহেব গ্রামের প্রভাবশালী মানুষ। সে সাধারণ মানুষকে চাতুরী ছলনা আর কূটকৌশলের সাহায্যে প্রতারিত করে। এ ধরনের প্রতারণা সে বহুবার করলেও বর্তমানে নিপীড়িত মানুষ প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। তারা এখন আর সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করে না। আলোচ্য গল্পের লালসা-উন্মত্ত জোতদার গোকুল শোষকশ্রেণির প্রতিভূ। আহ্লাদি | ও তার সম্পত্তির লোভে সর্বদা সে তাদের অতিষ্ঠ করে রাখে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের পলাশ সাহেব ‘মাসি-পিসি' গল্পের গোকুল চরিত্রকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

ঘ. উদ্দীপক ও 'মাসি-পিসি' গল্পে উভয়স্থানেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চেতনা প্রকাশ পেয়েছে।

'মাসি-পিসি' গল্পে আহ্লাদিকে ঘিরে মাসি-পিসির জীবন পরিচালিত হয়। আহ্লাদির মঙ্গল চিন্তাই মাসি-পিসির একমাত্র ধ্যান ও জ্ঞান। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার পাশাপাশি আহ্লাদিকে রক্ষার জন্য তারা প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। অত্যাচারী স্বামী এবং লালসা-উন্মত্ত জোতদার, দারোগা ও গুন্ডা বদমায়েশদের আক্রমণ থেকে আহ্লাদিকে নিরাপদ রাখতে এই দুই বিধবা এক দায়িত্বশীল ও মানবিক জীবনযুদ্ধ পরিচালনা করে।


উদ্দীপকেও আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতিত মানুষের প্রতিবাদী রূপ দেখতে পাই। যে পলাশ সাহেব নিজের প্রভাব কাজে লাগিয়ে গ্রামের মানুষদের চাতুরী-ছলনা আর কূটকৌশলের দ্বারা প্রতারিত করে আসছিল, তার বিরুদ্ধেই আজ নির্যাতিত মানুষ একত্র হয়েছে। তারা আজ কোনো অন্যায় মাথা পেতে নিচ্ছে না, বরং প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে।

উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে বলা যায়, উদ্দীপকে যে নির্যাতিত মানুষের প্রতিবাদী সত্তায় উত্তীর্ণ হতে দেখি তা ‘মাসি-পিসি' গল্পেও বাস্তবরূপ লাভ করেছে। দিনবদল ঘটেছে। মানুষ আজ আর কোনো অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করতে রাজি নয়। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখেছে। সুতরাং, উদ্দীপক ও 'মাসি-পিসি' গল্প উভয়স্থানেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চেতনা প্রকাশ পেয়েছে।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫: স্বামীর মৃত্যুর পর দশ বছরের মেয়ে রত্নাকে নিয়ে মহাবিপদে পড়ে রোকেয়া। গ্রামের বখাটেরা আজেবাজে কথা বলে, কিন্তু রোকেয়া হার মানে না। সে ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় কাজ নেয় এবং মেয়েকে ভালো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়। এভাবেই সে জীবনের সাথে লড়াই করে টিকে থাকে।

ক. মাসি-পিসি কী পণ করেছিল?

খ. ‘মুফতে যা পাওয়া যায় তাতেই জগুর প্রবল লোভ'— বুঝিয়ে লেখো।

গ. উদ্দীপকের রোকেয়ার সাথে 'মাসি-পিসি' গল্পের মাসি-পিসির সাদৃশ্য আলোচনা করো।

ঘ. “জীবনযুদ্ধের সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকটি 'মাসি-পিসি' গল্পের সম্পূর্ণ ভাবকে ধারণ করে না"- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. মাসি-পিসি আহ্লাদিকে জগুর কাছে ফেরত না পাঠানোর পণ করেছিল

খ. প্রশ্নোত্ত উক্তিটি দ্বারা জগুর লোভী মানসিকতাকে বোঝানো হয়েছে। দুর্ভিক্ষের সময় আহ্লাদির বাবা, মা ও ভাই মারা গেলে বাপের ঘরবাড়ি ও জমিজমার মালিক হয় আহ্লাদি। আহ্লাদিকে ফিরিয়ে নিলে জগু তার জমিজমার মালিক হয়ে যাবে। হোক তা সামান্য কিন্তু বিনা পয়সায় বিনা পরিশ্রমে অর্জিত সম্পত্তি জগু হাতছাড়া করতে চায় না। উল্লিখিত উক্তিটির মধ্য দিয়ে জগুর লোভী মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে।

গ. জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য লড়াই করার দিক থেকে উদ্দীপকের রোকেয়া ও 'মাসি-পিসি' গল্পের মাসি-পিসির সাদৃশ্য রয়েছে।

'মাসি-পিসি' গল্পে মাসি ও পিসির জীবন সংগ্রামের চিত্র ফুটে উঠেছে। এখানে লক্ষণীয়, মাসি-পিসি সর্বদা অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে লিপ্ত। টিকে থাকার জন্য গ্রাম থেকে তরিতরকারি শহরে নিয়ে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে হয় তাদের। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও তারা স্বামীর ঘর ছেড়ে আসা আহ্লাদির অভিভাবকের দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে না। অত্যাচারী স্বামী এবং লালসা-উন্মত্ত জোতদার, দারোগা ও গুন্ডা বদমায়েশদের আক্রমণ থেকে আহ্লাদিকে নিরাপদ রাখাকে তারা দ্রুত হিসেবে গ্রহণ করে।

উদ্দীপকের বিধবা রোকেয়া প্রতিকূলতাকে জয় করে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য লড়াই করে। স্বামীর মৃত্যুর পর গ্রামের বখাটেদের উৎপাতের কারণে সে তার মেয়ে রত্নাকে নিয়ে ঢাকা শহরে চলে যায়। সেখানে গিয়ে সে পোশাক কারখানায় কাজ করে। মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর জন্য তাকে একটি ভালো স্কুলে ভর্তি করে দেয় সে। একইভাবে, 'মাসি-পিসি' গল্পের মাসি-পিসিও জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে প্রতিকূল পরিবেশের সাথে লড়াই করে। তাই বলা যায়, প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করার দিক থেকে উদ্দীপকের রোকেয়া ও 'মাসি-পিসি' গল্পের মাসি-পিসির সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ. “জীবনযুদ্ধের সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকটি 'মাসি-পিসি' গল্পের সম্পূর্ণ ভাবকে ধারণ করে না"- মন্তব্যটি যথার্থ। কেননা, আহ্লাদির মতো রোকেয়া স্বামী কর্তৃক নির্যাতিত নয়।

‘মাসি-পিসি' গল্পের মাসি-পিসি দুজনই নিঃস্ব ও বিধবা। জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য তারা ধান ভানে, কাঁথা সেলাই করে এবং শাক-পাতা কুড়িয়ে শহরের বাজারে বিক্রি করে। আহ্লাদি স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে এলে তাকে তারা পরম মমতায় আগলে রাখে। এছাড়াও তারা জগুর অত্যাচার ও সমাজের বদলোকের কুদৃষ্টি থেকে তাকে রক্ষা করতে সবসময় সতর্ক থাকে। আলোচ্য উদ্দীপকের রোকেয়ার মাঝেও এমন সংগ্রামী মনোভাবের পরিচয় মেলে

উদ্দীপকের রোকেয়া স্বামীর মৃত্যুর পর তার দশ বছরের মেয়ে রত্নাকে নিয়ে বিপদে পড়ে। প্রতিকূলতার মধ্যেও সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার মানসিকতা ধারণ করে সে। এজন্য সে ঢাকা শহরে গিয়ে পোশাক কারখানায় কাজ করে। মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে সে তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেয়। 'মাসি-পিসি' গল্পেও এমন জীবন সংগ্রামের পরিচয় মেলে।

‘মাসি-পিসি' গল্পে স্বামী কর্তৃক আহ্লাদির শারীরিকভাবে নির্যাতিত হওয়ার দিকটি ফুটে উঠেছে। গল্পে লক্ষ করি, স্বামীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে আহ্লাদি তার মাসি-পিসির কাছে আশ্রয় নেয়। আহ্লাদিকে ফিরিয়ে নিতে জগু নানাভাবে চাপ দিলেও তার নিরাপত্তার কথা ভেবে মাসি-পিসি তাকে স্বামীর বাড়িতে পাঠাতে রাজি হয় না। আলোচ্য উদ্দীপকে আয়েশার অসহায়ত্ব ও জীবনযুদ্ধের পরিচয় পাওয়া গেলেও এখানে গল্পের আহ্লাদির স্বামী কর্তৃক নির্যাতিত হওয়ার দিকটির প্রতিফলন ঘটেনি। এছাড়াও গল্পটিতে দুর্ভিক্ষ, মহামারিসহ নানা চিত্র ফুটে উঠেছে, যা উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, “জীবনযুদ্ধের সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকটি 'মাসি-পিসি' গল্পের সম্পূর্ণ ভাবকে ধারণ করে ন মন্তব্যটি যথার্থ।

আমাদের শেষ কথা

আহ্লাদির প্রতি তার স্বামী জগু নির্যাতন করে। তাই সে তার মাসি পিসির কাছে চলে আসে আর ফিরে যেতে চায় না। কিন্তু তার স্বামী জগু তার সম্পদের লোভে তাকে ফিরিয়ে নিতে চায়। এজন্য সে নানা কৌশল করতে থাকে কিন্তু মাসি পিসির প্রচেষ্টায় তাকে ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়। মাসি পিসি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন পরে আশা করি উপকৃত হয়েছেন। উপকৃত হলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

Please Share this On:

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url